শুভেচ্ছা, এই লেখাগুলোকে গান বলা যায় কি না, জানিনা। লিখার সময় গুনগুন করে গাইছিলাম তাই গানই বলছি। হয়তো এগুলো কোনদিন গান হিসেবে গাওয়া হবেনা, আমিও হয়তো ভুলে যাবো। সে জন্যে এখানেই রাখলাম। আর পৃথিবীর প্রতি শুভকামনা।
কে গেছে পালিয়ে
কে গেছে পালিয়ে আমার আনন্দ নিয়ে
আমার বেদনা নিয়ে
আমি যেন এই জলভরা মেঘ
ঝরে পড়ি মাটির বুকে অঝরে।
যে খেলায় মেতে আছি আগুন পুষি যে বুকে
হৃদয়ের খোলা দ্বারে বসে কে আমায় ডাকে।
দুপুরের কোলে বসে কে যেন আছে
হাওয়া ভরা বন শুধু গেল যে পুড়ে।
পুরনো দেয়াল বুঝে শ্যাওলা কেমনে বাঁচে
যেন হৃদয় দিয়ে তারে এই জীবন যাচে।
হাওয়া ভরা খাঁচা পড়ে থাকে শুধু
সেই পোষা পাখি গেলো আকাশে উড়ে।
০৯/০৬/২০, সুইন্টন
কুটুম এলো বাড়িতে
কুটুম এলো বাড়িতে— গাছের ডালে কোন পাখী ডাকে গো
তার নাকের নথে সোনাফুল নাচে।
আমার বাড়ি নদীর পাড়
জালে রাঙা মাছগো— জলের তলে আহাজারি করে
সেইনা পথে কুটুম এলো
উড়িয়ে হাওয়ায় ধুলো গো— রাঙা মুখে সেই ধুলো ঝরে।
কুটুম এলো বাড়িতে আমি পাইনা তার দেখা গো
সেই চরণে এই চরণ রাখি
পাখীর মতন সন্ধ্যা কাটে উড়িয়ে ডানা আকাশে
যদি সে দেয় গো ফাঁকি।
তার বাড়ি ঝুঝন দূর
উড়ে পথে হাওয়া গো— ফুলের সুরভি নিয়ে উড়ে
সেইনা পথে হাটের লোক
পায়না চুলের 'বাস গো— সেই বিরহে এই নাক মরে।
কুটুম এলো বাড়িতে আমি নাই সে ঘরে গো
গাছের ডালে ডাকে কোন পাখী
নিরালা যে নদীর পানি যায় ভাটির টানেরে
সে অঝরে ভিঁজেনা দুই আঁখি।
১১/০৮/২০, ওল্ডহাম
গাছের পাতায় লাগলো হাওয়া
গাছের পাতায় লাগলো হাওয়া— দোলে দোলে দোলে গো
রেশমী চুল হাওয়াতে দোলে
দোলে গো দোলে গো খোঁপা তার গেলো গো খুলে।
আমায় নিয়ে কে ভাবে— এলোনা সে এলোনা
হাওয়া তো জানেনা তার ঠিকানা— এলোনা
আমি যেন গাছের পাতা— দোলে দোলে দোলে গো
আজ যেন এই হাওয়া উড়ে যায়
তার চুলের সুরভিরও নেশায়—
উড়ে উড়ে হাওয়া যায়— দূরে যায় দূরে যায়
দূরে আছে পুরানা এক বাড়ি—
সে বাড়িতে কে থাকে? সে থাকে, যে থাকে
পুকুর জলে হলো তার নাওয়া
ঘাটের জলে ঢেউ উঠে ভিঁজে তার শাড়ি গো
ভিঁজা চুলের সুরভি ছড়ায়—
আমার চোখে, আমার মুখে লাগে সে হাওয়া গো
প্রেম নদীতে আমার নাও ডুবায়।
জলের উপর ভাসে হাওয়া— দোলে দোলে দোলে গো
রাঙা পায়ে ঘাটের জল খেলে
দোলে গো দোলে গো খোঁপা তার গেলো গো খুলে
০৮/০৮/২০, ওল্ডহাম/সুইন্টন
কোন দরদে ডাকছো আমায়
কোন দরদে ডাকছো আমায়— ঝরে ফুলের কলি গো
সেই উঠানে দিও তারে ঠাই—
আমার যদি ঘুম ভাংগে না সপনে ডুবে যাই।
হাওয়ায় উড়ে ফুলের পাঁপড়
মাটিত শুয়ে ঘাস গো— জীবন বড় লাগে মধুময়
যে কারণে ফুলের সুবাস পায়না তার ঘর গো
সাধের পিরিত দূরে দূরে রয়।
কেন আমায় ডাকছো তুমি— নদীর ধারে গাছ গো
সেই ঝড় উড়াতে পারে নাই—
জলের উপর পালের নৌকা
আগুনে পুড়ে কাঠ গো— সহজ প্রেমর সাধ তার হয়
যে পিরিতে ঝড়ের হাওয়া ভাংগে তার ঘর গো
সাধ মিটাইয়া করে বনধুর ক্ষয়।
এই যে আমি ভাবছি তোমায়— মন্দ হওয়ার দোষ গো
পুড়ে যদি হাওয়ায় উড়ে ছাই—
২৬/০৮/২০, ওল্ডহাম
কেমনে যায় উড়ে পাখী
কেমনে যায় উড়ে পাখী— তার ডানা আছে গো
তার সপন আছে গো—
হাওয়ার উপর ডানা মেলে যায় উড়ে ডাকি।
শুনাবে গান তোমায়, আমার মনের কথা
বাঁজাবে দূরে বাঁশি সেই দরদী মমতায়।
কে ডাকে এমন করে— আমায় আগলে রাখে গো
তার বুকের পাশে গো—
জলের উপর হাওয়া যেমন দিয়ে যায় উঁকি।
সেই পুরনো জলসায়, হলো কত কবিতা
আঁকা হলো নিজের ছবি সেই পুরনো খাতায়।
যে চলে যায় দূরে— আমায় একা করে গো
তার হৃদয় ছিড়ে গো
হাওয়া ভরা কলের পাখী দিয়ে যায় ফাঁকি।
০৩/১০/২০, ওল্ডহাম