পাতার ডানা নাই তবুওতো উড়ে | বেলায়েত মাছুম

 


 

১.
আমি যেন মেতে আছি উৎসবে
নিবেদিত এক ঘর লোক
তন্দ্রার আলোয় ম্রিয়মনা সেই
পুরনো ছায়া ঘিরে।

উৎসব থামে হয়তো আমাকে ঘিরে
ফুলের পদবী নিয়ে
হয়তো দাড়াব কোন  বনের ধারে
নিজের সৎকার হয়ে।

২.
এমন সোনালী মলিন পাতার দিকে থাকাই
ঘড়ি পোড়ার শব্দ শুনি
আমার দেহকল ঘিরে আছে উৎসব
পলাতক রোদ খুঁজে পায়না কোন উপায়।

৩.
চোখের পলকে আটকে আছে সবুজ ক্যাকটাস
যেন মরুভূমি থেকে ঘুরে আসা এক উঠ
পাথরের ভাঁজে খুঁজতে থাকে পিপাসার জল;
উৎসব শেষ হলে আমিও বেড়াতে যাব
দলিলে শব্দ কত হয় তা গুনতে গুনতে।

৪.
রোদে পাতা শুকানো গেলো
মুমুর্ষ চোখ,
বিলাসে নত হতে থাকে  অপূর্ব সময়
আমি তার কাছে দাড়াই
নিজের ছায়ার তলে
পাতার মতন কিছু দূর উড়ে যাই।

৫.
পাতার ডানা নাই তবুওতো উড়ে
এমন কথা যত বার বলি— পাখী হেসে উঠে

৬.
অনেক ভাবা হলো তোমায়
হয়তো আরও অনেকে ভাবে
ফুলের সুরভী নিয়ে গত হয় দিন
গত হয় ভাবনার পুরনো দেয়াল।

৭.
আমার চোখে আছে চশমা
আছে তারাগন্ধা রাত
সমুদ্র কতদূর জানিনা
জানি তোমার দূরত্ব আজ।
রোজ মেঘের কলতান শুনি
আর পাখীদের আনাগোনা
ঘাসের ভেতর কার শৈশব
ভুলে যায় তার পুরনো সাঁজ।
৮.
আমাদের প্রেম বুঝি সুর্যাস্তের উজ্জ্বল আভা
সুখি গৃহহস্থের বর্ষার বিকেল
মরক্কো দেশের উষ্ণ হাওয়া।

৯.
ভাবি সুখি হবো
একদিন পালিয়ে যাবো নিজের থেকে—
ভাবি দূরে কোথাও আমি
পলাতক পা দু'টি নিয়ে
ঘুরতে ঘুরতে তোমার দরজায় দাড়াই।
কোথাও যাবো আমি
ক্লান্ত লোকের মতো, ভবঘুরে দিনে;
পৃথিবীর এমন কোন দরজা নাই
যা আটকে দিবে আমায় সুখি হতে।

১০.
চোখ বন্ধ করলেই আমি উড়তে পারি
এমন অনুশীলন নিয়ে আমি পাখীদের বাড়ি যাই।
পাখী শাস্ত্রের প্রথম পাঠ—  মাতাল হওয়া যাবেনা
মেনে নিয়ে আমি ঘুরতে থাকি। আহ্লাদী পাখীরা আমার
গালে চুমু খায়। তারা আমন্ত্রণ করে  নতুন
যৌবতী পাখীটার প্রেমিক হতে। কিন্তু আমিতো মানুষ,
মাতাল হওয়া লুকাতে পারিনা, জন্ম থেকেই অক্সিজেনে নেশা।
মাতাল লোকেরা, মাতাল লোকেদের মাতাল ভাবেনা— 
এমন কথা আমার প্রেমিকা পাখীটারে বুঝাতে থাকি।
দূরে—  পাখীদের বাড়ি থেকে আমি উড়তে থাকি
উড়তে উড়তে কোথায় চলে যাই, দিশা পাই না;
প্রেমিকার নরম হাতের মতো কোমল হাওয়া
আমায় নিয়ে ভাসতে থাকে—



- ওল্ডহাম, ম্যানচেষ্টার



belayatmaum